ভ্রমণ ২: সন্ধ্যালোকে শান্তিনিকেতন
নবমী নিশি। গুস্করা দিয়ে ফেরার পথে, হাইওয়ের অপর পারের গ্রামের নিস্তব্ধ অন্ধকারের ফাঁকে, মাঝে মধ্যেই চোখে পড়ছে গুটিকতক হ্যালোজেন আলোর রোশনাই। স্নিগ্ধ গ্রামবাংলার পরিমণ্ডল একেবারে চেপে ধরেছে, ঘুমে চোখ প্রায় বন্ধ হয়ে আসে। এক কানে earphone-এ বাজছে "মধু বসন্ত"। কখনত্ত কখনত্ত দুর থেকে ভেসে আসা ঢাকের শব্দের সাথে মিশে যাচ্ছে সুমধুর পল্লীগীতি।
সে এক অদ্ভুত সুন্দর মিশ্রণ।
প্রতিবারই শান্তিনিকেতন থেকে ফেরার পথে এই রাস্তা ধরা হয়। তবু আজকে কেমন যেনো অন্যরকম লাগছে, মনটা বেশ ভারী। বোলপুর থেকে বেরোনোর পর বৃষ্টি অনেকটাই কমে গেছে, তবে মাঝে মধ্যেই একটা দমকা হওয়া এসে মুখের উপর চুল গুলো এলোমেলো করে ছড়িয়ে দিয়ে যাচ্ছে।
এতদিন এদিকে আসছি, কই একবারও তো মনে হয়নি যে তাড়াতাড়ি কলকাতা ফিরে যাই!
-
ওই যে, সোনাঝুরি শেষ প্রান্তে যে চায়ের দোকানটা? আমাদের জন্যে সেটা অনেকটা কলকাতার 'ক্যালকাটা পাই' এর মত। অথবা ধর্মতলার অনাদি কেবিন। বৃষ্টিভেজা বেলাশেষে কত গল্প, গান, রাজনীতি, পড়াশুনো, সাহিত্য। তবে এখন সেসব নিরস্ত। Kasahara-র কোনার টেবিলে পেয়ালার ঠুনঠুন আওয়াজের ফাঁকে, ঘণ্টার পর ঘণ্টা জমিয়ে আড্ডা টা তাহলে এবারের মত গুটিয়ে নেওয়া যাক?
মিছিলের কর্মসূচি দেখে ঠিক করা সামনের রবিবারের প্ল্যানটা নয় আপাদত অনির্দিষ্টকালের জন্য স্থগিত থাকুক।
আসলে কি বলো তো, আমরা সবাই তো আজ নয় কাল ফিরে আসবো। সেদিন নয় আবার হবে। গান, গল্প, বিপ্লব।
যাক, আজ রাস্তার ধারে আমাদের সেই 'ফ্ল্যাগ-ওয়ালা' রেস্তোরাঁয় আর গাড়ি থামাবো না। আজ সোজা বাড়ি।
আর বেশি দেরি নেই যে। রাত পোহালেই বিদায়।
Is this the last one?
ReplyDelete